Wednesday, 28 October 2015

এই পৃথিবীতে সব কথা বলা হয়ে গেছে তাই -

তোমাকে বলার মতো আজ আমার কাছে- 

নতুন কিছু নাই ।

সেই আঞ্চলিক ভাষা থেকে- আজকের এই আধুনিক ভাষায়,

গদ্যে-পদ্যে, অলঙ্কারে, অসংখ্য প্রতীকে উপমায়- 

হাজার বছরে মানুষ সব বলে দিয়েছে ; 

ইথারও তাকে থরেবিথরে- 

বুকের মধ্যে নিয়েছে।


তারপর বলো তুমি কোন্‌ নতুন কথা শুনবে ? 

সসীম এই মনুষ্য একদিন- 

অসীমকেও গুনবে ? 

অথবা তারা বলবে ঈশ্বর আছে ? 

কিংবা প্রমান হবে ইশ্বর বলে কিছু নেই ? 

সমস্ত মহাবিশ্বের ভর- রয়ে যাবে- তবুও শূন্যেই ?


ছোট ছোট পা ফেলে- মানুষের এই অসীমের যাত্রায় - 

ভ্রম্মান্ড ব্যাখ্যাতীতই রবে- 

বহুবিধ মাত্রায় ? 

সেই জগৎকে যত রঙে- যতভাবে- বারবার 

এঁকে যাবে কবি, 

মহাবিশ্ব আসলেতে হলগ্রাফিক ছবি ? 


গ্রীক, ইনকা, ফারাও থেকে আজকের ঢাকা ?

পিসার হেলানো মিনার কেন হলো বাঁকা ? 

মোনালিসার ছবিটা কার ? কে এই মোনা ? 

মুনলীট সোনাটা কোন রাগে বোনা ? 

কে ছিল মনের মানুষ লালনের গানে ?

বর্ষা নামতো নাকী মালহার তানে ? 

ফসলের বীজ থেকে বহুজাগতিক ?

মক্কা শরীফে কে মহা নাস্তিক ? 

দ্রৌপদীর পাঁচ স্বামীর কোনটা প্রেমিক ? 

খ্রিষ্ট, জেসাস, যীশুর কোন নাম ঠিক ? 

কোনটা শহুরে ধারা- কী গেঁয়ো না ?

ফিরে এসো তাড়াতাড়ি- আজ যেয়ো না ?

ঘুম থেকে উঠে যাও- কিংবা ঘুমাও ?

হাত ধুয়ে খেতে বস- আরেকটু নাও ? 

মজিব, জিয়া থেকে গান্ধী, অশোক ?

রাজা, নেতা কে কি কোনটা ঘোষক ?


সব সব সব কথা হয়েছে বলা

এখন সময় শুধু দেখেশুনে চলা। 

কথা নয়- শুধু শোনা- শুধু চেয়ে দেখা, 

কথার জবাবে হবে নতুন লেখা।

- অনি।
২৮/১০/১৫
রাত- ৩ঃ১২
সারাদিন খেটেখুটে -

ক্ষয়ে যাই বেঁচে থাকার দায় ,

বড্ড ক্লান্ত দেহ ;

দুষ্প্রাপ্য বিছানাতে শরীর লুটায় ,

শূন্য চোখ চেয়ে থাকে অন্ধকার ঘরে;

দুঃস্বপ্নের ভয়ে সে ঘুমাতেও ভয় পায়।

তবুও সকাল হয়;

নতুন ভোর- ধরে রাখে প্রাণপণ- পুরানো সময়।

লাকড়ির মতো আমি ঢুকে পরি সময় চুলায়,

স্বপ্নগুলি পুড়তে থাকে আহা !

বাস- জ্যাম- পথের ধূলায়।

আমি একজন লবনাক্ত মানুষ-

যেনো সভ্যতার ঘাম ;

শুভ্র টিস্যুর মতো কেউ একদিন এসে -

মুছে দিলেই হবে সবার- সবচেয়ে আরাম ।

তাই আমি শুভ্রতার থেকে দূরে থাকি

আমি ঘাম, আমি অপাঙতেয়,

পরিচিত দোকানে না দিলে কখনও বাকী ;

যখন মনে হয় - ভিখারির জীবনওতো ছিল-

এর থেকে শ্রেয়।

তবু আমি প্রাণপণ বেঁচে থাকতে চাই ,

যতোই রোদে পুড়ে গিয়ে- আমি আমার স্বপ্ন পোড়াই -

একটি গোপন সাধ তবু রয়ে যায় মনে-মনে ;

যদি কোনদিন সে - এই কথা শোনে!

জীবন যাচ্ছে ক্ষয়ে - সময় যাচ্ছে বয়ে- অবাক নিষ্ঠুরতায় ;

তবুও আরো একটি দিন আমি বাঁচি ...

তার একটু ভালোবাসার আশায় ।

- অনি।
২৫/১০/১৫
রাত- ২ঃ০৪

Wednesday, 21 October 2015

কিষাণ মাঠে মুরুলি বাজায়,
লেলুয়া বাতাস তরুর ছায়ায়,
গগন ঘনশ্যাম;
চরাচরে যত চিরল বাতাস,
ডাকছে পাতারা মধূকুপি ঘাস-
তোমার আমার নাম।

আমিতো সখি এসেছিনু আজ,
ফেলে রেখে সব সময়ের কাজ,
কই তুমি ? কই তুমি ?
মেঘমন্দ্র যে বাজে মুহুমুহু, 

এক ধারাজলে এক হই দুহু -
মিলনের মৌসুমি । 


প্রান্তরের ঐ পাগলা হাওয়া,
ধানের ক্ষেতে দিচ্ছে ধাওয়া,
উড়ছে ধানের ঘ্রান;
আকাশ জোড়া মেঘেরদলে,
উর্মি নাচা পুকুর জলে-
উতল হাওয়ার গান।

তোমারওতো মনে তৃষ্ণা আছে,
জল খোঁজ করো মরুর গাছে,
আজ হোক ডুবাডুবি
ময়ূরের মতো পেখম তুলি,
আজ নাচ হবে সবকিছু ভুলি-
প্রকৃতির প্রান ছুবি।

পাখির ডানায় অস্থিরতা,
শাঙন ধারায় অধীরতা,
ধূলায় মাটির গন্ধ ;
টানটান এক উত্তেজনায়,
আরো ঘন মেঘ গগনে ঘনায়-
সময়ের দম বন্ধ।

মাতাল পবন নামবে শ্রাবন,
মেদুর আকাশ সঘন মগন,
মালহারে মূলতানে ,
গাইবো দুজনে মিলনের গান,
বক্ষে-বক্ষে পরানে পরান-
বাঁধিব সে সব গানে।

তুমি সখি মোর আসবে বলে,
মেঘ ঘনিয়েছে আরো দলে দলে,
আমিও প্রতীক্ষায়;
শিরশির হাওয়া শিরায় শিরায়,
অরন্য সবুজ সিক্ত পাতায়-
বাদলও ব্যাকুল বায়।

হাহাকার করে ঝোড়ো হাওয়া বয়,
বজ্র বাজে চিরিয়া হৃদয়,
আকাশের মন কাঁদে ,
প্রকৃতির এই আয়োজন থাকে,
চিরদিন শুধু আমাদের ডাকে-
মিলনের আহ্লাদে।

আমরাই কভু শুনিনা সে ডাক,
আকাশ যতই বর্ষা সাজাক,
আমরা শুকনা থাকি;
শরীরে শুকাই, মনেতে শুকাই,
সবাই সবার তৃষ্ণা লুকাই-
নিজেকেই দেই ফাঁকি।

এই আহ্বান তোমারতো জানা,
দুপায়ে বেঁধেছ টালবাহানা,
সামাজিক সংসারে ,
প্রকৃতি সেতো সামাজিক নয়,
প্রতি বর্ষায় একই ভাবে বয়-
তব আঙিনার ধারে ।

তাই এসো দোহে একসাথে ভিজি কোন এক বর্ষায়
তারপর যদি ভেসে যাই স্রোতে কিবা হায় আসে যায়।

- অনি।
২২/১০/১৫
রাত- ১ঃ৫৮

Saturday, 17 October 2015

মৃত্যুর পরও জোছনা হবে - কুহেলি রুপালি জ্যোতি;
প্রাসাদের ছাদে জোছনা নামলে-
নাইবে চন্দ্রাবতী ?

বর্ষার কোনও রিক্সা ভ্রমনে- নিয়ন রাতের ঢাকায়,
কবে মরে গেছি !
ধুয়ে গেছি তাই -
কিছু ডুবে যাওয়া চাকায়। 


রিক্সা চলবে হুড তুলে দিয়ে-
হুহু বাতাসের রাতে,
রিক্সা কিংবা প্রাসাদের কোনে- হাত লেগে রবে হাতে।

কার হাত সেটা জানিনা -
তবে ফাগুনের হাত নয়,
তোমার কোমল আঙুল জানেনা - আগুনের বিস্ময়।

আগুন জ্বলবে পৌষের শীতে-
হয়তো তোমার দেশে ,
পশমি চাদর উষ্ণতা দিবে -
জীবনেরে ভালোবেসে।

কাসার থালায় অন্ন রাখবে -
সিঁদুর থাকবে গাঢ় ,
স্নান সেরে আসা ভেজা ভেজা কেশ -
স্নিগ্ধতা দিবে আরো।

আমি ঘুমিয়েছি গহীন তমায়-
অনেক জীবন জেগে,
শঙ্খ শরীর আঁধারে গলছে - বরফের হিম বেগে।

খ্রিষ্টের রাতে ঘুমিয়ে থাকবে -
শত শতকের পরে-
আমিও ভুলবো নির্ঘুম রাত- জেগেছি চন্দ্র ঘোরে ,

সিথানের ঘুম ভেঙে যাবে নাকি - নিশুথি রাতের বালা ?
মৃত্যু জেনেছি- তবু ভুলিনাই- জেগে থাকবার জ্বালা...

- অনি।
১৮/১০/১৫
প্রায় ভোর- ৪ঃ২১
মনরে তুই রইলি একাই
সবার বুকে এ সংসারে
যে জন বুঝতে পারে -
সব মানুষে এক মনেরই আরাধনা
মিঠা নোনা জলের মতন
এক হয়ে রয় সকল জনা।
অবতার হয় ভবের কুলে
সবাই ছোটে জগৎ ভুলে
ভেদ জানে যে আকুল মনা।
সব রুপে মন রইলি প্রকাশ
বাতাস যেমন গাছ পানিতে
দমে দমে প্রাণ দানিতে
মানব জীবন মাটিও ঘাস।
এক মনই যে কথা বলে
দেশে কালে দর্শন হলে
কেউ তবু হায় চিনিলনা।
সবার ভিতর বিরাজ করে
চিরদিনের সেই একজনা।


- অনি।
১৭/১০/১৫
রাত - ৩:০৪

Tuesday, 13 October 2015

মানুষ হচ্ছে এমন এক বই- যার কোনও দ্বিতীয় সংস্করণ নেই;
যার প্রতিটি অক্ষর নিজ হাতে প্রতিপল লিখছে সময় ,
জীবনের শেষ পাতায় একদিন তার স্বাক্ষর পরবেই ,
তার আগেই তোমার আমার -
গল্প রচিত হয়।

মানুষ হচ্ছে এমন বই যাকে পড়া যায় ;
যদিও সেটা পড়তে লাগে মানবিক জ্ঞান ,
তোমার বইয়েই তা পাবে পাতায় পাতায় ,
শুধু একটু মিশিয়ে নিও-
সময়ের ধ্যান।

মহাকালের আমি এক নগন্য পাঠক;
প্রতিটি মানুষ একেকটি অনন্য বই ,
নতুন নতুন বই পড়া আমার এক সখ ,
যতদিন বাঁচি আমি-
বই পড়বই ।

কোনও বই প্রিয় খুব, কোন বই ক্লাসিক,
কেউবা মিস্টার এন্ড মিসেস, কেউ - মিস,
কোনও বই অস্থির করে, কেউ করে ঠিক,
কোনও বই চলতি সময়ের-
মাস্টারপিস।

নানান গল্প পড়ে, বুঝি আমি আমার সময় ,
ভালোবাসাই সত্য এই লিখিত জীবনে,
আমার নিজের বইয়েরও হলে মান নির্ণয় -
তোমার আমার গল্প রবে -
একই সংকলনে।

ইচ্ছে করে- নিজেই লিখি নিজের জীবন ,
সময়ের হাত থেকে কেড়ে নেই- সব লেখা ,
ভালোবাসায় ভরে দেই মানুষের মন ,
মুছে দেই ব্যর্থ মানুষের -
পদচিহ্ন রেখা ।

- অনি।
১৪/১০/১৫
সকাল- ৮ঃ৩০
নিজের জমিন চাষে দিয়া হইলি রে সুফলা,
অনাবাদির জঙ্গলা ভিটায় বনের ছলাকলা।
বনের মাটি জানেনা যে চাষের ফসল সোনা,
ফসল পাঁকা ধানের গন্ধ হাওয়ার কাছে শোনা।
বন পায়না বর্গাচাষি মন দেয়না চাষা,
আবাদ জমি তৃপ্ত হলেই বনকে ভালোবাসা।
বনও বোঝে ফসল মাঠে চাষির মনই সুজন,
বনের কাঠ চুলায় দিয়ে জঙ্গলে বনভোজন।
রাতের হাওয়া বনে বনে জঙলাভিটায় কয়,
সব জমিকেই আগে পরে জঙলা হতে হয়।
দুঃখ ভবে- মাঠের চাষি ফসল রেখে ঘরে,
বনের মনের গঠন, ধরন, স্বভাব নিরিখ করে। 


- অনি
১৩/১০/১৫
রাত- ১:৪২