Wednesday, 28 October 2015

এই পৃথিবীতে সব কথা বলা হয়ে গেছে তাই -

তোমাকে বলার মতো আজ আমার কাছে- 

নতুন কিছু নাই ।

সেই আঞ্চলিক ভাষা থেকে- আজকের এই আধুনিক ভাষায়,

গদ্যে-পদ্যে, অলঙ্কারে, অসংখ্য প্রতীকে উপমায়- 

হাজার বছরে মানুষ সব বলে দিয়েছে ; 

ইথারও তাকে থরেবিথরে- 

বুকের মধ্যে নিয়েছে।


তারপর বলো তুমি কোন্‌ নতুন কথা শুনবে ? 

সসীম এই মনুষ্য একদিন- 

অসীমকেও গুনবে ? 

অথবা তারা বলবে ঈশ্বর আছে ? 

কিংবা প্রমান হবে ইশ্বর বলে কিছু নেই ? 

সমস্ত মহাবিশ্বের ভর- রয়ে যাবে- তবুও শূন্যেই ?


ছোট ছোট পা ফেলে- মানুষের এই অসীমের যাত্রায় - 

ভ্রম্মান্ড ব্যাখ্যাতীতই রবে- 

বহুবিধ মাত্রায় ? 

সেই জগৎকে যত রঙে- যতভাবে- বারবার 

এঁকে যাবে কবি, 

মহাবিশ্ব আসলেতে হলগ্রাফিক ছবি ? 


গ্রীক, ইনকা, ফারাও থেকে আজকের ঢাকা ?

পিসার হেলানো মিনার কেন হলো বাঁকা ? 

মোনালিসার ছবিটা কার ? কে এই মোনা ? 

মুনলীট সোনাটা কোন রাগে বোনা ? 

কে ছিল মনের মানুষ লালনের গানে ?

বর্ষা নামতো নাকী মালহার তানে ? 

ফসলের বীজ থেকে বহুজাগতিক ?

মক্কা শরীফে কে মহা নাস্তিক ? 

দ্রৌপদীর পাঁচ স্বামীর কোনটা প্রেমিক ? 

খ্রিষ্ট, জেসাস, যীশুর কোন নাম ঠিক ? 

কোনটা শহুরে ধারা- কী গেঁয়ো না ?

ফিরে এসো তাড়াতাড়ি- আজ যেয়ো না ?

ঘুম থেকে উঠে যাও- কিংবা ঘুমাও ?

হাত ধুয়ে খেতে বস- আরেকটু নাও ? 

মজিব, জিয়া থেকে গান্ধী, অশোক ?

রাজা, নেতা কে কি কোনটা ঘোষক ?


সব সব সব কথা হয়েছে বলা

এখন সময় শুধু দেখেশুনে চলা। 

কথা নয়- শুধু শোনা- শুধু চেয়ে দেখা, 

কথার জবাবে হবে নতুন লেখা।

- অনি।
২৮/১০/১৫
রাত- ৩ঃ১২
সারাদিন খেটেখুটে -

ক্ষয়ে যাই বেঁচে থাকার দায় ,

বড্ড ক্লান্ত দেহ ;

দুষ্প্রাপ্য বিছানাতে শরীর লুটায় ,

শূন্য চোখ চেয়ে থাকে অন্ধকার ঘরে;

দুঃস্বপ্নের ভয়ে সে ঘুমাতেও ভয় পায়।

তবুও সকাল হয়;

নতুন ভোর- ধরে রাখে প্রাণপণ- পুরানো সময়।

লাকড়ির মতো আমি ঢুকে পরি সময় চুলায়,

স্বপ্নগুলি পুড়তে থাকে আহা !

বাস- জ্যাম- পথের ধূলায়।

আমি একজন লবনাক্ত মানুষ-

যেনো সভ্যতার ঘাম ;

শুভ্র টিস্যুর মতো কেউ একদিন এসে -

মুছে দিলেই হবে সবার- সবচেয়ে আরাম ।

তাই আমি শুভ্রতার থেকে দূরে থাকি

আমি ঘাম, আমি অপাঙতেয়,

পরিচিত দোকানে না দিলে কখনও বাকী ;

যখন মনে হয় - ভিখারির জীবনওতো ছিল-

এর থেকে শ্রেয়।

তবু আমি প্রাণপণ বেঁচে থাকতে চাই ,

যতোই রোদে পুড়ে গিয়ে- আমি আমার স্বপ্ন পোড়াই -

একটি গোপন সাধ তবু রয়ে যায় মনে-মনে ;

যদি কোনদিন সে - এই কথা শোনে!

জীবন যাচ্ছে ক্ষয়ে - সময় যাচ্ছে বয়ে- অবাক নিষ্ঠুরতায় ;

তবুও আরো একটি দিন আমি বাঁচি ...

তার একটু ভালোবাসার আশায় ।

- অনি।
২৫/১০/১৫
রাত- ২ঃ০৪

Wednesday, 21 October 2015

কিষাণ মাঠে মুরুলি বাজায়,
লেলুয়া বাতাস তরুর ছায়ায়,
গগন ঘনশ্যাম;
চরাচরে যত চিরল বাতাস,
ডাকছে পাতারা মধূকুপি ঘাস-
তোমার আমার নাম।

আমিতো সখি এসেছিনু আজ,
ফেলে রেখে সব সময়ের কাজ,
কই তুমি ? কই তুমি ?
মেঘমন্দ্র যে বাজে মুহুমুহু, 

এক ধারাজলে এক হই দুহু -
মিলনের মৌসুমি । 


প্রান্তরের ঐ পাগলা হাওয়া,
ধানের ক্ষেতে দিচ্ছে ধাওয়া,
উড়ছে ধানের ঘ্রান;
আকাশ জোড়া মেঘেরদলে,
উর্মি নাচা পুকুর জলে-
উতল হাওয়ার গান।

তোমারওতো মনে তৃষ্ণা আছে,
জল খোঁজ করো মরুর গাছে,
আজ হোক ডুবাডুবি
ময়ূরের মতো পেখম তুলি,
আজ নাচ হবে সবকিছু ভুলি-
প্রকৃতির প্রান ছুবি।

পাখির ডানায় অস্থিরতা,
শাঙন ধারায় অধীরতা,
ধূলায় মাটির গন্ধ ;
টানটান এক উত্তেজনায়,
আরো ঘন মেঘ গগনে ঘনায়-
সময়ের দম বন্ধ।

মাতাল পবন নামবে শ্রাবন,
মেদুর আকাশ সঘন মগন,
মালহারে মূলতানে ,
গাইবো দুজনে মিলনের গান,
বক্ষে-বক্ষে পরানে পরান-
বাঁধিব সে সব গানে।

তুমি সখি মোর আসবে বলে,
মেঘ ঘনিয়েছে আরো দলে দলে,
আমিও প্রতীক্ষায়;
শিরশির হাওয়া শিরায় শিরায়,
অরন্য সবুজ সিক্ত পাতায়-
বাদলও ব্যাকুল বায়।

হাহাকার করে ঝোড়ো হাওয়া বয়,
বজ্র বাজে চিরিয়া হৃদয়,
আকাশের মন কাঁদে ,
প্রকৃতির এই আয়োজন থাকে,
চিরদিন শুধু আমাদের ডাকে-
মিলনের আহ্লাদে।

আমরাই কভু শুনিনা সে ডাক,
আকাশ যতই বর্ষা সাজাক,
আমরা শুকনা থাকি;
শরীরে শুকাই, মনেতে শুকাই,
সবাই সবার তৃষ্ণা লুকাই-
নিজেকেই দেই ফাঁকি।

এই আহ্বান তোমারতো জানা,
দুপায়ে বেঁধেছ টালবাহানা,
সামাজিক সংসারে ,
প্রকৃতি সেতো সামাজিক নয়,
প্রতি বর্ষায় একই ভাবে বয়-
তব আঙিনার ধারে ।

তাই এসো দোহে একসাথে ভিজি কোন এক বর্ষায়
তারপর যদি ভেসে যাই স্রোতে কিবা হায় আসে যায়।

- অনি।
২২/১০/১৫
রাত- ১ঃ৫৮

Saturday, 17 October 2015

মৃত্যুর পরও জোছনা হবে - কুহেলি রুপালি জ্যোতি;
প্রাসাদের ছাদে জোছনা নামলে-
নাইবে চন্দ্রাবতী ?

বর্ষার কোনও রিক্সা ভ্রমনে- নিয়ন রাতের ঢাকায়,
কবে মরে গেছি !
ধুয়ে গেছি তাই -
কিছু ডুবে যাওয়া চাকায়। 


রিক্সা চলবে হুড তুলে দিয়ে-
হুহু বাতাসের রাতে,
রিক্সা কিংবা প্রাসাদের কোনে- হাত লেগে রবে হাতে।

কার হাত সেটা জানিনা -
তবে ফাগুনের হাত নয়,
তোমার কোমল আঙুল জানেনা - আগুনের বিস্ময়।

আগুন জ্বলবে পৌষের শীতে-
হয়তো তোমার দেশে ,
পশমি চাদর উষ্ণতা দিবে -
জীবনেরে ভালোবেসে।

কাসার থালায় অন্ন রাখবে -
সিঁদুর থাকবে গাঢ় ,
স্নান সেরে আসা ভেজা ভেজা কেশ -
স্নিগ্ধতা দিবে আরো।

আমি ঘুমিয়েছি গহীন তমায়-
অনেক জীবন জেগে,
শঙ্খ শরীর আঁধারে গলছে - বরফের হিম বেগে।

খ্রিষ্টের রাতে ঘুমিয়ে থাকবে -
শত শতকের পরে-
আমিও ভুলবো নির্ঘুম রাত- জেগেছি চন্দ্র ঘোরে ,

সিথানের ঘুম ভেঙে যাবে নাকি - নিশুথি রাতের বালা ?
মৃত্যু জেনেছি- তবু ভুলিনাই- জেগে থাকবার জ্বালা...

- অনি।
১৮/১০/১৫
প্রায় ভোর- ৪ঃ২১
মনরে তুই রইলি একাই
সবার বুকে এ সংসারে
যে জন বুঝতে পারে -
সব মানুষে এক মনেরই আরাধনা
মিঠা নোনা জলের মতন
এক হয়ে রয় সকল জনা।
অবতার হয় ভবের কুলে
সবাই ছোটে জগৎ ভুলে
ভেদ জানে যে আকুল মনা।
সব রুপে মন রইলি প্রকাশ
বাতাস যেমন গাছ পানিতে
দমে দমে প্রাণ দানিতে
মানব জীবন মাটিও ঘাস।
এক মনই যে কথা বলে
দেশে কালে দর্শন হলে
কেউ তবু হায় চিনিলনা।
সবার ভিতর বিরাজ করে
চিরদিনের সেই একজনা।


- অনি।
১৭/১০/১৫
রাত - ৩:০৪

Tuesday, 13 October 2015

মানুষ হচ্ছে এমন এক বই- যার কোনও দ্বিতীয় সংস্করণ নেই;
যার প্রতিটি অক্ষর নিজ হাতে প্রতিপল লিখছে সময় ,
জীবনের শেষ পাতায় একদিন তার স্বাক্ষর পরবেই ,
তার আগেই তোমার আমার -
গল্প রচিত হয়।

মানুষ হচ্ছে এমন বই যাকে পড়া যায় ;
যদিও সেটা পড়তে লাগে মানবিক জ্ঞান ,
তোমার বইয়েই তা পাবে পাতায় পাতায় ,
শুধু একটু মিশিয়ে নিও-
সময়ের ধ্যান।

মহাকালের আমি এক নগন্য পাঠক;
প্রতিটি মানুষ একেকটি অনন্য বই ,
নতুন নতুন বই পড়া আমার এক সখ ,
যতদিন বাঁচি আমি-
বই পড়বই ।

কোনও বই প্রিয় খুব, কোন বই ক্লাসিক,
কেউবা মিস্টার এন্ড মিসেস, কেউ - মিস,
কোনও বই অস্থির করে, কেউ করে ঠিক,
কোনও বই চলতি সময়ের-
মাস্টারপিস।

নানান গল্প পড়ে, বুঝি আমি আমার সময় ,
ভালোবাসাই সত্য এই লিখিত জীবনে,
আমার নিজের বইয়েরও হলে মান নির্ণয় -
তোমার আমার গল্প রবে -
একই সংকলনে।

ইচ্ছে করে- নিজেই লিখি নিজের জীবন ,
সময়ের হাত থেকে কেড়ে নেই- সব লেখা ,
ভালোবাসায় ভরে দেই মানুষের মন ,
মুছে দেই ব্যর্থ মানুষের -
পদচিহ্ন রেখা ।

- অনি।
১৪/১০/১৫
সকাল- ৮ঃ৩০
নিজের জমিন চাষে দিয়া হইলি রে সুফলা,
অনাবাদির জঙ্গলা ভিটায় বনের ছলাকলা।
বনের মাটি জানেনা যে চাষের ফসল সোনা,
ফসল পাঁকা ধানের গন্ধ হাওয়ার কাছে শোনা।
বন পায়না বর্গাচাষি মন দেয়না চাষা,
আবাদ জমি তৃপ্ত হলেই বনকে ভালোবাসা।
বনও বোঝে ফসল মাঠে চাষির মনই সুজন,
বনের কাঠ চুলায় দিয়ে জঙ্গলে বনভোজন।
রাতের হাওয়া বনে বনে জঙলাভিটায় কয়,
সব জমিকেই আগে পরে জঙলা হতে হয়।
দুঃখ ভবে- মাঠের চাষি ফসল রেখে ঘরে,
বনের মনের গঠন, ধরন, স্বভাব নিরিখ করে। 


- অনি
১৩/১০/১৫
রাত- ১:৪২
ইতিহাস আর গল্প জেনে - তোমাকে করেছি ক্ষমা
সম্রাট আমি ভালোবাসার, তুমি আমার প্রিয়তমা ।

তুমি জানো তত যুদ্ধে যাইনি- যত ছিল ঐ মহড়া,
মন যতটা দৌড়ায় তত পারেনা ক্ষিপ্র ঘোড়া ;
তাই মনে-মনে বহু রাজ্যের প্রাসাদে দিয়েছি হানা,
কত রাজ্যেকে এইভাবে করে- কিছু কিছু হলো জানা ;
কত লোক এলো ঘটনা নিয়ে- আমার এই দরবারে,
কত মিছে কথা ঢাকলো কথার লুকানো অলঙ্কারে। 


মন দিয়ে শুনি সেইসব কথা- ঐ ভিন দেশি গল্প;
হস্তি, ঘোড়া, পদাতিক বেশি, কূটনীতি কার অল্প ;
কোন রাজ্য জয় করা যাবে- সাম্রাজ্য অভিসারে,
মনি-মুক্ত ছড়ানো থাকে, কোন রাজ্যের ধারে ;
কোন সেনাপতি হারেনাই রণে, তবুও নির্বাসনে ;
কোন রাজারকুমার ফিরে আসেনাই- রাজকুমারীর মনে।

সামন্ত প্রভুর অত্যাচারে- কাঁদে বনে পশু-পাখি;
জলসাঘরে মারলো রাজারে- সারাব- সুরায়- সাকী।

কার হেরেমে পাঁচ হাজার নারী, তিনশত তবু রানী;
হরবোলা থাকে বিচারের কাজে - হয় যদি শুনানি।

কোন প্রাসাদের অলিন্দে আছে- বাতাসের ষড়যন্ত্র,
কোন মহলের পুরোহিত দেয়- চিরযৌবন মন্ত্র,
কোন মন্দিরে বলি দিতে হয়- সবচেয়ে রুপসী নারী,
রাজা হলো কে সিংহ মেরে, যেছিল বন শিকারি ;
কত রাজা হলো পথের ভিখারি- ভিক্ষুক হলো রাজা;
সিংহাসনের লোভে কোন রাণী- শূলে দিলো শেহজাদা।

আরো বহু বহু গল্প আছে, জানে তা- মৃত্যু কুয়া;
যুদ্ধের মাঠে নিহত সেনার- শ্মশানের পোড়া ধুঁয়া।

সম্রাট আমি, আমাকেও তাই- যেতে হয় সব শুনে ;
ঢাল, তলোয়ার, বর্শা হাতে- তীর ভরে রেখে তূণে।

রাজপালঙ্কে শুয়ে কাটে রাত,- নির্ঘুম সম্রাট ;
যদি পারতাম, ছেড়েই দিতাম- মিথ্যা রাজ্যপাট,
ছোট কুঁড়ে ঘর, প্রিয়তমা মোর, কিইবা এমন ক্ষতি-
নাম না জানা হেরেমের যদি - হতো সে চন্দ্রাবতী ?

- অনি
সন্ধ্যা রাত- ৭ঃ৫৬

Friday, 9 October 2015

পরান সখি রইলে রে তুই কার পরানে ?
তোরে খুঁজি ভিন্ন লোকের অন্য গানে
কত লোকে বান্ধে যে গান নানান সুরে
সাত বাজারে খুঁইজা বেড়াই ঘুরে ঘুরে
কার কন্ঠে সইরে আমার পরলি ধরা
সাধ জাগে মোর সাধন করি সে অন্তরা
একবার গাই ঐ গান যা আমার প্রানে
সপ্তসুরের পরান সখি গায় পরানে... 


( যারা নিজেকে জানে তাদের জন্য পুরস্কার। আর যারা আমার মতো, নিজেকে এখনো খোঁজে নানান মানুষের মাঝে- তাদের কে তিরস্কার। )

- অনি
১০/১০/১৫
রাত- ১ঃ১২

Thursday, 8 October 2015

চোখে চোখ রেখে একদিন নিহত করেছিলে আমায়
তোমার সায়ানাইড ভালোবাসায়
সেই বিষপান করে জেনেছি- বন্ধু
মৃত্যুর পরেও একরকম বেঁচে থাকা যায়।
হেমলক হলাহলের নাম তখনও শুনি নাই আমি কিশোর
সত্যের দ্বাররক্ষী হয় মিথ্যার মতো চোর
আমার জানা ছিলোনা - জানো ?
মনের দহন সেদিনও আছিল নিভানো।
যে আগুন জ্বলছে আজ মগজের নিউরনে
পুড়ে দেবো এত সবুজ নেই কোনও পৃথিবীর বনে
তাই আমার স্বপ্নগুলোকে একা একা পুড়ি
পুড়ে ফেলি প্রেম, আশা আর জীবনের বাহাদুরি
দগ্ধ দেহে দাঁড়িয়ে থাকি জীবন সমুদ্রের পাড়ে
সময়ের উর্মিমালাও ছোয়না যারে তারে
শঙ্খবালির উপর শুয়ে থাকি
শামুক ঝিনুক ছাড়াও আরো কিছু টুকিটাকি
চেয়েদেখে দগ্ধ কাষ্ঠের সব ক্ষত
ঢেউগুলো অবিরাম অবিরাম-
তৃপ্ত সঙ্গম শেষে নির্লিপ্ত মানুষের মতো
লুটায় অবিরত। 


- অনি।
০৯/১০/১৫
রাত- ২ঃ৩৫
তুমি প্রকৃতির মতো নারী, তাই আকাশের প্রিয়তমা
আমি মানবিক প্রেম জানি, জানিনা ঈশ্বরকৃত ক্ষমা।

পুঞ্জমেঘের ধারাজলে তুমি পাথরে আঁকাও নির্ঝর
শৈলপ্রপাতে শুকনো মাটির তৃষ্ণাতে দাও নীর ঝড়
সেই জলে হয় বহু জলাশয় কতশত নদ-নদী
কত প্রান্তর গড়ে ছোট ঘর কুলে কুলে নিরবধি
ফুলে ফুলে কত জোছনা ঘুমায় সেইসব প্রাঙ্গণে
তোমার স্পর্শ বিমর্ষ কাটায় মেঘ জল বনে বনে
তুমি মাঠে-মাঠে ভাঙা সব ঘাটে পিঁপড়া, ফড়িঙ ডানায়
শস্য,ফসল ঘাসে অবিরল যেখানে যেমন মানায়
ঋতুমতী তুমি রূপবতী ভূমি কর তারে নিজ গুনে
পোকারা ঘুমায় পাখির ডানায় আকাশের গান শুনে
মানুষ বাঁচে পেট ভরে খেয়ে স্নান করে ফিরে ঘরে
আগামী দিনের তৃষ্ণার জল তাদের কুয়াতে ঝরে
পশুদের রেখে অভয়ারণ্যে জনারণ্যে আনো প্রেম
তীর্থের জলে নিষ্কাম করো অন্তর শিখা হেম
সময়ের হাতে মানুষেরে কর মানুষের চেয়েও বড়
এক মানুষের জীবন বাঁচাতে জাতিগত হয়ে লড়ো
পাহাড়ে পাহাড়ে সাগরের পাড়ে দিয়ে যাও সভ্যতা
সাগরের তল চন্দ্রের কোল বিজয়ের লভ্যতা
দিয়ে যাও সব যত বৈভব ছোট থেকে মহা-প্রানে
অতীতের সুর আগামীর কথা আজকের গাওয়া গানে
ধন্য করো তুচ্ছ জীবন যাকে টেনে নাও বুকে
মঙ্গল আর কল্যান পায় জীবনের দুঃখে-সুখে
আকাশও তোমায় ভালোবাসে তাই চন্দ্র-সূর্য-তারা
দিবস-রজনী দিয়েছে তোমার আলোয় কীর্ণ ধারা
তোমায় দিয়েছে তোমার মতন শত-শত কোটি সঙ্গী
তারাও ভীষন বিভঙ্গ প্রিয় মৌলিক সব ভঙ্গী
তারা কেউ কেউ তোমার ছায়া কেউ পুরোপুরি ভিন্ন
কোটি বছরের প্রতিশ্রুতি আছে হবেনা হবেনা খিন্ন
আরো কোটি বছর পাশেই রবে হয়তোবা চিরকাল
আকাশ দিয়েছে ভালোবেসে তার আপামর মহাকাল।
অথচ তোমার অসীম জীবনে দুই দিকে ঢাকা ক্ষণ
দিবসের কাছে গোপন রাখেছো নিশীথের কালো মন
যে পায় জীবন মরনে জানেনা জীবনের কোন স্মৃতি
যাকে কাছে টানো জানেনা সে জন কুহকের সম্পৃতি
গড়ে তোল তুমি সৃজন কর প্রানে দেহে দাও আশা
শিশুর হাতের খেলনার মতো প্রেম প্রীতি ভালোবাসা
স্বপ্ন দেখাও বড় করে তোল ইচ্ছায়ও দাও শক্তি
অল্প ক্ষনের সঙ্গমে রাখো অসীমের মায়া ভক্তি
যারা কাছে পায় হারাতে না চায় অথচ হওনা কারো
যত ক্ষন ছিল ফুরিয়ে ফেলেছ সৃষ্টি করবে আরো
আমিও এমন ক্ষণিক মিলন মুহূর্তের এক পল
ভেবেছি আমার অরন্য পাহাড় নদী সাগরের জল
ভেবেছি তোমার ছয় ঋতু যত চন্দ্রের ষোল কলা
তোমার প্রেমেই এবার হবে অসীমের পথ চলা
যা কিছু দিয়েছো দুই হাত ভরে নেবেনা সেসব কেড়ে
জন্মের সাধ মিটিয়ে দেবেনা জীবনের প্রান মেরে
প্রেম দাও বুকে স্বপ্ন দেখাও ভালোবাসা দাও প্রানে
সময়ের আগে সব কেড়ে নাও এর কিবা আছে মানে ?
আমাকে যা দাও দিয়েছো আগেও আবার কাউকে দেবে
তাহলে তোমার কি হই আমি সেটাই যাচ্ছি ভেবে
যদি বা আমি তোমারই হতাম তোমারই একটি অংশ
আমাকে কি তবে মুছে দিতে তুমি পুরোপুরি করে ধ্বংস
আসলে তুমি প্রকৃতির মতো স্বভাব কেবলই সৃষ্টি
হোক সে জোছনা হোক সে অমা অথবা কুয়াশা বৃষ্টি
হতে পারো তুমি হাতের বাঁশি পারমানবিক বোমা
সনাতন কালের কুহেলিকা তুমি কুহকের উপমা
তোমাকে আমি চাইনি তুমি নিজেই এসেছো কাছে
সবাই ভাবে সবার জীবনে সে'ই প্রেম হয়ে আছে
জীবনের এই ক্ষনিকের প্রেমে বীজ রেখে দাও গর্ভে
অতীতের বীজ ধুয়ে ফেলে দাও আগামীর কোন গর্বে ।


তুমি প্রকৃতির মতো নারী, তাই আকাশের প্রিয়তমা
আমি মানবিক প্রেম জানি, জানিনা ঈশ্বরকৃত ক্ষমা...

-অনি
০৭/১০/১৫
রাত- ২ঃ২১
যেই দেশে আমি আজ থাকি
তার নাম এখন বাংলাদেশ।
তার আগে সেছিল পূর্ব-পাকিস্তান -
এক দেহে দুটি ভুল প্রান
এবং তারও আগে পুর্ব-বঙ্গ ;
লর্ড মাউন্ট ব্যাটেন জিন্নার কথায় করেনি তখনও ভঙ্গ
এক বিশাল প্রান তখনও হয়নি পুরোটা শেষ
হরিকেল, সমতট, গৌড়, পুন্ড্র, অস্ট্রিক, বৈদিকের রেশ
সেদিনও পেয়েছিল এই অঞ্চল,
কোন একদিন সে ছিল-
সম্রাট অশোকের মহতি অনুষঙ্গ ।

পৃথিবীর মানচিত্রে হাজার হাজার বছর আগে
সভ্যতা গড়েছিল এই দেশ-
নগরী প্রাচীর তুলেছিল ট্রয়ের মতো দম্ভে, গর্বে
তার পুর্বে নিমজ্জিত ছিল সে
আজকের এই সমুদ্রের নোনা গর্ভে ।
এই মহীরুহ বৃক্ষের শেকড়ের মুল
হাজার হাজার বছরের প্রাচীন মৃত্তিকার গভীরে দীক্ষিত
বহুকিছু দেখেছে এই গঙ্গা আর যমুনার কুল
ভাঙা গড়ার স্বচ্ছল খেয়ালে সে যথেষ্ট স্বতন্ত্র শিক্ষিত।
তাই বিনয় নিয়ে বলি- খবরদার!
হাজার পাঁচেক বছরেরও বেশি এই সভ্যতা আমার
আমাকে দেখিওনা তোমার রপ্তানি করা মাল
মসলিন কাপড়ে পুছিনাই তোমার ঐসব বাল-ছাল
গান কবিতা মানবতায় গড়া
আমাদের এই ছোট ছোট কুঁড়ে ঘর
তোমাদের চেনে দুনিয়ার লোকে মুর্খ আর বর্বর।
তোমাদের নেই ইতিহাস শুধু যুদ্ধ দখল ছাড়া
আমাদের নদী পলিতে গড়েছে বহু কীর্তির ধারা ।
শান্তির নামে চোখ বেঁধে খেলো ভ্রান্তির কানামাছি
জারি, সারি, রবি, হাসন, লালনে বহু শান্তিতে আছি।
শান্তিতে আছে বহু বহু দেশ তোমরাও সেটা জানো
তোমাদের হাতে নিরাপদ নয় তোমাদের সন্তানও...
ভয় দেখিয়ে শান্ত রাখা শান্তি নয়রে বোকা
গোলক ধাঁধাঁর মিথ্যা ভয়ে রয়ে গেলি একরোখা।

- অনি।
০৪/১০/১৫
বিকেল- ৪ঃ৪০
অতল শুন্য সময়ে হারিয়ে যাচ্ছে বস্তুজগতের ক্ষণ,
তাই মৃত্যুর মাত্রা স্পর্শের আগে তোমাকেই প্রয়োজন,
হোক ভালবাসা-প্রেম, কামে ঘামে হই নির্মল নিষ্কাম,
চির অনাগত ভ্রুনের মনে রেখে যাই-
একদিন আমরা ছিলাম...

- অনি।
০২/১০/১৫
রাত- ১২:০০